সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
রূপগঞ্জের সাওঘাট এলাকায় আড়ত দখলকে কেন্দ্রে করে জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি রাতে সেলিম প্রধান বাদী হয়ে ৫৬ জন আসামির নাম উল্লেখ করে তিনি এই মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন , কাহিনার মৃত হাজী মোঃ নাজির উদ্দিনের ছেলে ডাঃ মোঃ মজিবুর রহমান (৫৫), মোহাম্মদ আলী আলীর ছেলে মোঃ আইয়ুব আলী (৩৫), মৃত হাজী মোঃ নাজির উদ্দিনের ছেলে মোঃ কাজল (৪৮), ভুলতা এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মোস্তফা মেম্বার (৪৬), সাওঘাট এলাকার সুলতান এর ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন (৩৫), রূপসী এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আজাবর রহমান (৪৫), -গোলাকান্দাইল ৫নং ক্যানেল এলাকার খবির মাতব্বর এর ছেলে অলি মাতব্বর (৩৭), আমলাব এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন (৪৫), আধুরিয়া এলাকার মোদাচ্ছের এর ছেলে গোলজার হোসেন (৩৭), মাছিমপুর দেওয়ানবাড়ি এলাকার মোঃ লতিফের ছেলে শুটার রিয়াজ (২৮), শুটার মোহাম্মদ (২৫), বরুনা এলাকার শুটার রফিক (২৫), মুড়াপাড়ার জব্বার মেম্বারের ভাগিনা শুটার কাজল (২৬), মাছিমপুরের আরজুর ছেলে শুটার মামুন (৩০), মাছিমপুর দেওয়ানবাড়ীর শুটার পারভেজ (৩০), শুটার সুজন (২৫), মাছিমপুরের শাকিল আহম্মেদ নুরু (৩০), ওমর হোসাইন – (২৭), রাকিব হাসান রাজ (৩০), মাছিমপুর দেওয়ানবাড়ির ইয়াছিন (৩৫), আব্বাস ভূঁইয়া (৩০), মাছিমপুরের শফিউর আজম রাজু (৩৫), মর্তুজাবাদ এলাকার আশরাফুল হক রিপন (৩৭), মাহনা পূর্বপাড়া এলাকার জজ মিয়ার ছেলে মোঃ নাজমুল (৩৬), তারাব এলাকার রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে মোঃ দীপ ভূঁইয়া (২৮), সাংঘাট এলাকার মোতাহার হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে শাওন ভূঁইয়া ওরফে ওয়ান্টেড শাওন (২৭), গোলেনুর ভান্ডার এর ছেলে সাগর ভান্ডারী (৩৫), মর্তুজাবাদের আইবুর হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে মোঃ রাফিন ভূঁইয়া (২৭), শাহজাহান শাওন (৩২), মোক্তার হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে মোঃ জিসান ভূঁইয়া (৩১), রবিউল দরজীর ছেলে তাইফুর দরজী (৩৭),
মাহনা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত মোস্তফার ছেলে মোঃ কাওসার (৩২), মাছিমপুরের দীন ইসলামের ছেলে ইয়াছিন মিয়া (৩৮), ইলিয়াছ মিয়া (৩৫), গালাকান্দাইল ৫নং ক্যানেল এলাকার সাগর মাতব্বর (৩৪), আধুরিয়া বালুরমাঠ এলাকার মনির উদ্দিন মেম্বার এর ছেলে মোঃ ইমরান (৩৫), সাওঘাট এলাকার নাজমুলের ছেলে লিমন (৩২), কামালের ছেলে সেজান (২৩), আজিজের ছেলে ইমরান (২৭), মাছিমপুর গোয়ালিবাড়ির রাজিব (২০), মর্তুজাবাদের আব্দুর রউফ এর ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৪), গোলাকান্দাইলের সেন্টু ঘোষের ছেলে উৎফল ঘোষ (৩৫), মাঝিপাড়ার মন্নাফ ভূঁইয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৫), বাদল ভূঁইয়া (৪২), আউখাব এলাকার আঃ হাই এর ছেলে নাজমুল (৩৩), মর্তুজাবাদের মোর্শেদ (৩৮), মাছিমপুরের নাঈম (২৮), মাছিমপুরের ওসমান (৩৪), মর্তুজাবাদের মকবুল
রাসেল (৩৬) (পিতা-অজ্ঞাত) , মাছিমপুরের হযরত আলী (৪৬), গন্ধর্ব্বপুরের সুরুজ মিয়ার ছেলে আঃ হাফেজ (৩০), বরপার সুরুজ মিয়ার ছেলে স্বপন মোল্লা (২৫), বরপার বশির উদ্দিন সাউদের ছেলে রমজান সাউদ (৪০), রূপসীর আঃ রাজ্জাকের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৫), পাড়াগাঁও এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে রাকিব (২৫)। এছাড়া এ মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে , পূর্ব শত্রুতার জের গত ২৮ জানুয়ারি বেলা ১১.০০ ঘটিকার সময় রূপগঞ্জ থানাধীন “সাওঘাট সাকিনের সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস্ লিঃ প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরীতে বেআইনী জনতাবদ্ধে হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, রামদা, ছেনদা, চাকু, ছোরা, চাইনিজ কুড়াল ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহকারে আসিয়া অনাধিকারে সেলিম প্রধানের ফ্যাক্টরীর মধ্যে প্রবেশ করিয়া ১নং আসামী মজিবুর রহমান এর হুকুমে, সকল আসামীরা আমার ফ্যাক্টরীর মালামাল, মেশিনারিজ ভাংচুর করিয়া আনুমানিক-২,০০,০০,০০০/-(দুই কোটি) টাকার ক্ষতিসাধন করে। ২নং হইতে ২০নং আসামীগণ আমার ফ্যাক্টরীর ভিতর লক্ষ্য করিয়া কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করিয়া বিস্ফোরন ঘটায়। ২১নং হইতে ৩৫নং আসামীগণ আমার ফ্যাক্টরীর মূল ফটকের সামনে আসিয়া খুন করার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি করিতে থাকে। ১নং আসামী মজিবুর রহমান তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত (ক) মোঃ রাফি আহম্মেদ স্বপন (৩০), পিতা-মনির হোসেন, সাং-কালাপাহাড়িয়া, থানা-আড়াইহাজার, জেলা-নারায়ণগঞ্জকে লক্ষ্য করিয়া গুলি করিলে উক্ত গুলি তাহার কোমরে লাগিয়া গুলিবিদ্ধ হইয়া গুরুতর জখম হয় এবং মাটিতে লুটাইয়া পড়ে। ২নং আসামী আইয়ুব আলী হাতে থাকা পিস্তল দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত রাজু ভূঁইয়া (২৪), পিতা-দীল মোহাম্মদ, সাং-সাওঘাট, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জকে লক্ষ্য করিয়া গুলি করিলে উক্ত গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া তাহার বাম পায়ে লাগিয়া গুরুতর জখম হয়। ৫নং আসামী আলমগীর হোসেন হাতে থাকা ছেনদা দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত মোঃ জাহিদুল ইসলাম (২২) এর মাথায় কোপ মারিলে তিনি মাথা সরাইয়া নিলে উক্ত কোপ তাহার বুকে লাগিয়া গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী কাজল হাতে থাকা ছেনদা দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত শিশির আহম্মেদ মাছুম (৩০) এর মাথায় কোপ মারিয়া গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৭নং আসামী অলি মাতব্বর হাতে থাকা পিস্তল দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে আমার ম্যানেজার মনিরুল ইসলামকে লক্ষ্য করিয়া গুলি করিলে তিনি ফ্যাক্টরীর ফ্লোরে শুয়ে পড়ায় উক্ত গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ইহাতে তিনি প্রানে বাঁচিয়া যায়। ৮নং হইতে ১০নং আসামীগণ আমার ফ্যাক্টরীর ভিতরে রাখা নিশান কোম্পানীর জীপ গাড়ী এবং ফ্যাক্টরীর ভিতর ৪র্থ তলা ভবনের নিচ তলায় পেট্রোল দ্বারা অগ্নিসংযোগ করিয়া যাবতীয় আসবাবপত্র পুড়াইয়া অনুমান-২০,০০,০০০/-(বিশ লক্ষ) টাকার ক্ষতিসাধন করে। ২৫নং হইতে ৩৫নং আসামীগণ আমার ৪র্থ তলা ভবনের ২য় তলায় ফ্যাক্টরীর লকার ভাঙ্গিয়া ৫০,০০,০০০/- (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা চুরি করিয়া নেয়। ৪নং হইতে ৭নং আসামী ফ্যাক্টরীর বাউন্ডারীর ভিতরে অবস্থিত স্টোর রুমে পেট্টোল দ্বারা অগ্নিসংযোগ করিয়া ৫০টি মোটরসাইকেলের মধ্যে ২০টি মোটরসাইকেল পুড়াইয়া এবং বাকী মোটরসাইকেল ভাংচুর করিয়া আনুমানিক ২,০০,০০,০০০/-(দুই কোটি) টাকার ক্ষতিসাধন করে। অন্যান্য আসামীরা ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তরে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের জন্য তৈরিকৃত চেক বইসহ অন্যান্য সরকারী, বেসরকারী অফিসের গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র আগুন লাগাইয়া পুড়াইয়া দিয়া আনুমানিক ৫,০০,০০,০০০/-(পাঁচ কোটি) টাকার ক্ষতিসাধন করে। আসামীরা আমার ফ্যাক্টরী এবং বাসা হইতে ও ফ্যাক্টরী স্টোর রুম হইতে অফিসের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের অনুমান ২০টি মোটরসাইকেলসহ অনুমান ৫,০০,০০,০০০/-(পাঁচ কোটি) টাকার মালামাল লুটপাট করিয়া নিয়া যায়। আসামীরা সর্বমোট-১৪কোটি ৭০লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন ও মালামাল লুটপাট করিয়া নিয়া যায়। ইতিপূর্বে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে আমার ক্রয়কৃত নিজস্ব ২০ (বিশ) বিঘা জমিতে থাকা কাঁচা বাজারের আড়ৎ আসামীরা জবর দখল করিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ সেখানে থাকা ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে জোরপূর্বক অর্থ উত্তোলন করিয়া আসিতেছে। এলাকার লোকজন আগাইয়া আসিতে থাকিলে আসামীরা ফাঁকা গুলি বর্ষন করিয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাইয়া আমাকে এবং আমার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাননাশের হুমকি দিয়া চলিয়া যায়।
ঘটনার পর ফ্যাক্টরীর কর্মকর্তা/কর্মচারীরা জখমী মোঃ রাফি আহম্মেদ স্বপন, রাজু ভূঁইয়া, শিশির আহম্মেদ মাছুম, মোঃ জাহিদুল ইসলামদেরকে উদ্ধার করিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। বর্তমানে তাহারা চিকিৎসাধীন আছে। তাহাদের অবস্থা আশংকাজনক। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত হোসেন।